দুই মাস হলো নতুন চাকরিতে গেছে আমার বন্ধু।চাকরি পাওয়ার পর প্রথম ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছে যাবার আগে ঈদের  কেনাকাটা করে বাড়িতে যাবে।আমাকে নিয়ে গেছে তার সহকারী হিসাবে। সাবান থেকে শুরু করে পেয়াজ,রসুন  সব ধরনের মসলা সেমাই, চিনি, ঈদ সামগ্রী সবই। তারপর বাবার জন্য পাঞ্জাবী , মায়ের জন্য শাড়ি,বোনের জন্য জামা ভাইয়ের জন্য শার্ট  সব কিছুই নেয়া শেষ। জিজ্ঞেস করলাম তোর জন্য কিছু কিনবি না? উওরে বললো আছে ঢাকা থেকে নিয়ে আসছে।আমি কথা বাড়াই নি জানি যা আছে সবই পুরোনো।
সদ্য চাকরিতে যাওয়া ছেলেরা কত টাকা বেতন পায় তা জানা আছে ।আর এতো কিছু কেনার পর
বেতনের কত টাকাই থাকবে আল্লাহ্ আর আমার বন্ধুই ভালো জানে।এইসব কেনার সময় তার চোখে যে কি আনন্দ আহারে । দেখেই স্বর্গীয় সুখ।
কেনাকাটা শেষ সে বায়না ধরছে তার সাথে বাড়ি যেতে হবে ইফতার করতে। বাড়িতে কি হয় দেখার লোভ সামলাতে পারি নি তাই বলতেই রাজি হয়ে গেলাম। যাত্রাপথে তার আত্মতৃপ্তি দেখে হিংসে হচ্ছিল।
 যাওয়ার পর বাড়ির সবাই তো ভীষণ খুশি ছেলে চাকরি করে  বাড়ি আসছে, মায়ের হাতে বাজার তুলে দিয়ে একে একে সবার জন্য নেয়া জামা কাপড় দেয়া শুরু করলো  বাবা, মা, ভাই, বোন ।
ছবিটা অহেতুক
ছেলের কান্ড দেখে তার বাবার চোখটা কেমন জানি  ঝাপসা হয়ে গেছে।  পরিবারের বড় ছেলে প্রথম উপার্জন করে তাদের জন্য  এতো কিছু নিয়ে এসেছে মা বাবার এর থেকে বড় পাওয়া কি আছে? মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিছে  বন্ধুর  চোখেও জল বাবার চোখ থেকে জল পরছে। কিছু সময়ের জন্য মনে হলো আমি  সপ্ত স্বর্গের  কোন একটাতে আছি। এর থেকে শান্তির পরিবেশ আমি আর কোনদিন দেখিনি।একটা পরিবারে তার উর্পাজনক্ষম  ছেলে বাড়িতে আসা নিয়ে এতো আনন্দময় পরিবেশ তৈরি হতে পারে জানা ছিল না
পৃথিবীর কতকিছু জানি না আমি।এই আনন্দ দেখার মত ক্ষমতা আমাকে সৃষ্টিকর্তা দেয়নি।
আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিল  গলা ধরে আসছে। আমি ঘর থেকে বের হয়ে এসে হাঁটা শুরু করছি ,অনন্ত নক্ষত্র বীথি’র পথে।
জুন ২০১৯

															