কোটা আন্দোলন থেকে দেশ সংস্কার

September 11, 2025
adminsr
“কোটা আন্দোলন থেকে দেশ সংস্কার”
ছাত্ররা যৌক্তিক দাবীতে আন্দোলন  শুরু করেছিল।সেখানে ছাত্র থেকে শুরু করে আপামর জনতা সবাই অংশগ্রহণ করে।তারপর গণ অভ্যুত্থানে শেষ হলো আন্দোলন।
সবাই রাজপথে থেকে শুরু করে অনলাইনে সক্রিয় ছিল।প্রথম দিকেই ফুফাতো ভাই গ্রেফতার হয়।বুঝেন তো বাকস্বাধীনতা । তার উপর ডিজিটাল আইনে পরিচিত একজন মাইর খেয়ে যাচ্ছে। আর এতোটাও সাহসী ও না আমি। কিন্তু মন ছটফট করতো রাজপথের ভাইবোন গুলোকে দেখে। পরিচিত মহলে আলোচনায় “আপোস না সংগ্রাম ” মন বলে উঠতো সংগ্রাম সংগ্রাম।
তবে রাজপথে নেমেছি ডাক ঢোল পিটিয়ে না।  রাজপথে যে কয়েকদিন গেছি খুব আড়ালে যেতে হয়েছে। শেষ দিন মরতে মরতে বেঁচে ফিরলাম। এমন বহু মানুষ সংগ্রাম আর লড়াই করেই স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
আমার আশেপাশের কয়েকজন’কে আন্দোলনের শুরু থেকেই সাদা কালোর তফাৎ বুঝাতে চেষ্টা করছিলাম।  যদিও আমার জ্ঞানের পরিধি কম। তবু মনটা মানতো না।
আমার আশেপাশে কয়েকজন পরিচিতদের দেখেছি তারা রাজনীতি ও রাজনীতির ইতিহাস আমার থেকে হাজার গুণ বেশি বুঝে। তবু মানতে নারাজ যা হচ্ছে ভুল হচ্ছে। শেষ দিকে শেখ হাসিনা একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েই যাচ্ছিলেন। আর শেষ কয়েক বছর তো উনার আশেপাশে যারা ছিল সব চাটুকারের দলের কথা বাদই দিলাম।
আমি কোন সমালোচক নই।তবুও যতটুকু বুঝি তাদের ভালো মন্দের দিক গুলো তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করলাম।
গত সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল কি ছিল জানেন? শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান করা। উনি ভুলে গেছিলেন ছাত্ররাই সব জয়ের মূল হোতা।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীরা কি নির্যাতিত জীবন যাপন করেছে তার ছাত্র সংগঠন দ্বারা তা সবারই জানা।  লেখাপড়া করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে কিন্তু লেখাপড়ার জন্য একটি পড়ার টেবিল পায়নি, ঘুমানোর জন্য একটি বিছানা পায়নি। নির্যাতন করে মিটিং মিছিল করতে নিয়ে যেত। কারণ বড় মিছিল দেখালে সরকার খুশি হয়। না হয় পদ থাকবেনা। যাকে বলে হীরক রাজার দেশের জনপ্রিয়তা।
সাধারণ ছাত্ররা নির্যাতিত হয়েছে। অথচ ইতিহাস সাক্ষী করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই আমাদের সকল আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। জানেন তো ৫২-র আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১,  ৯০,২০০৭,২০২৪-সের আন্দোলন। এতো অর্জন সত্বেও শিক্ষার্থীরাই থেকেছে সবচেয়ে অবহেলিত।
যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তখন কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল।যদিও তাদের কখনো কোটার প্রয়োজন ছিল না।  তবে আজকে এসে হতাশ হলাম এইসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নামগুলো কেমন ম্লান হয়ে যাচ্ছে, বৈষম্য শেষ হোক এটাই চাওয়া। ১৮ জুলাইয়ের দিন সরকার যা অন্যায় করেছে তার হিসাব এখন দিল্লি বসে বসে পাচ্ছে।
ছাত্রদের জাত কেমন তা তো বুঝিয়ে দিল রাজনৈতিক দল গুলোকে।যদি আপনারা তাদের ক্ষুদ্র জাতি ভাবেন তাহলে আপনারা এক একটা বো*চো*…।
শেখ হাসিনা ভুল করতেই পারে না। শেখ হাসিনাই ঠিক। মানুষ মাত্রই ভুল। এতো এতো খুন, গুম,   বিচার বহির্ভূত হত্যা,হাজার কোটি টাকা পাচার, সীমাহীন দুর্নীতি  এই যে এই ভুল গুলো কি তার পতনের ভুলের  কারন না। আন্দোলন ২৩ দিনে চার দফা, ৮ দফা,৯ দফা,পরে এক হেচকা টানে ১ দফা।
একটু নমনীয় হয়ে ইগো অংহকার, অতি আত্ম বিশ্বাস কমিয়ে কয়েকটা দফা মেনে ছাত্রদের সাথে বসলেই মিটে যেতো।  ৯ দফার শেষ সময়েও এসে যদি নমনিয় হতো তাহলে হয়তো উনার ইগো তে উনি সহ একটা দল এভাবে তুপের মুখে পড়ত না।
 এই ২৩ দিন আগে গত ১৫ বছর কি হয়েছে না হয়েছে তা টিনের চশমা খুললে বুঝতে পারবে সাদা কালা তফাৎ না বুঝা মানুষজন। এতো এতো গোয়েন্দা সংস্থা এতো এতো লোকবল উনাকে কি কেউ বুঝাতে পারছিলেন না যে উনার নমনীয় হওয়া উচিৎ?
যারা বিশ্বাস করেনি শেখ হাসিনা ভুল করতে পারে তাদেরই ক্ষতি হলো। আমার এক পরিচিত আগের দিন বৈঠা নিয়ে ছবি দিয়ে বলল কাল দেখে নিবে।অস্তিত্বের লড়াই চলে। পরদিন কি হলো তার দোকান  জনগন দেখে নিয়েছে। এরকম হাজার হাজার নেতাকর্মী এখন লুকিয়ে জীবন যাপন করছে। নিউটনের সূত্র মতে যা করছেন তার ফল তো পাবেনই। কোন ভাবেই বুঝাতে পারছি না এতো গুলো মানুষ ভুল না শেখ হাসিনার নমনীয় হওয়া উচিৎ। টিনের চশমা পড়াগুলো বুঝতেয় চায় না গত ১৫ বছরে তাদের এতোটাই আত্ম বিশ্বাস যে নেত্রী যাই করে ঠিক।
 তবে আমার মনে হয় যেমন কুকুর তেমন মুগুর আমরা যে রকম জাতি সেরকম সরকার ছিল। গদি থেকে নামতেই ১৫ বছরের হিসাব নিতে শুরু করলেন আরেকদল।সবচেয়ে ঘৃণিত উপায়ে। হাওয়া ভবন আর আয়না ঘর যেমন মুদ্রার এপিট ওপিট।
কিন্তু কি জানেন,,
শেখ মুজিব এবং হাসিনা সরকার দুজনে আমার কাছে দুটি সত্ত্বা। যার একটা সত্ত্বাকে আমি যতটা ভালোবাসি, আরেক সত্ত্বাকে ঠিক ততটাই সমালোচনা করি( যদিও এতোদিন পরিচিত মহল ছাড়া আমার মত ভীতু মানুষ কিছুই বলতে পারি নি)
 শেখ মুজিব আমার কাছে ঠিক এমন একজন মানুষ। যা হাসিনা সরকারের সাথে তার ইতিহাসের কোন মিল নাই। তবে তাদের শাসক ইমেজ প্রায়োরিটি কিছুটা একই ছিল।
শেখ মুজিবের জেল বা সংগ্রাম নিয়ে অনেক কথাই বিএনপিরা বলে। উনি নাকি সরকারের সাথে কোলাবোরেট করে জেলে যেতেন। কথাটা আমি কখনোই বিশ্বাস করি না। একটা মানুষ কোলাবোরেট করে দুইমাস জেল খাটতে পারে, ১১ বছর তো কখনই না। এসব আজগুবি আষাঢ় মাসের গল্প এদের মুখেই মানায়।
আমার কাছে শেখ মুজিব আমাদের প্রাণের নেতা। ব্যাকব্রাশ চুল, সাদা পাঞ্জাবী,আহ কি তার দরাজ কন্ঠ ছিল।আশা জাগানিয়ার মত।নেতা কাকে বলে উনাকে যারা দেখেছে হয়তো তারাই ভালো জানে। ৭ মার্চের ভাষণ শুনলে আমার বিশ্বাস প্রায় সব মানুষের গায়ে কাঁটা দেয়।
মুজিবকে বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় খুলে দিয়ে দেবতার আসনে বসিয়েছিলেন।  কিন্তু ১৯৭১ এর পরবর্তী মুজিব সেই হৃদয়কেই ক্ষতবিক্ষত করেছিলেন কিছুটা হলেও ।  (২০০৯-২০২৪)এখন তার মেয়ে।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম গুম, প্রথম ক্রসফায়ার মুজিবের হাত ধরেই হয়েছিলো। যা ১৫ বছরে প্রতিদিন করেছে হাসিনা সরকার।
হুমায়ূন আহমেদ, কাজী নজরুল ইসলামের বাড়ি দখল করেছিলো ছাত্রলীগ আর রক্ষীবাহিনীর পান্ডারা।
সিরাজ শিকদারকে বিচার বহির্ভূত হত্যা করে মুজিব সংসদে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর অশ্লীলতম উল্লাস করে বলেছিলেন।কোথায় আজ সিরাজ শিকদার!!( যে বইতে পড়েছিলাম সেটা এখন নিষিদ্ধ)। আমার এই তথ্যগুলো ভুল হতে পারে কেউ জানলে শুধরে দিবেন।
 ঠিক আজ কিংবা ১৭ বছর আগে তার ব্যাতিক্রম না বিএনপি সরকার।
তখন লুটপাট দুর্নীতি করে দেশকে দুর্ভিক্ষে ফেললেন। আর তার কার্টুন আকানোর দায়ে ধরে ধরে জেলে ভরা হলো আল মাহমুদকে। কিন্তু এখন যারা ক্ষমতায় আসবে তার হয়তো ফাঁসি দিবে না হয় আছন্নে ফেলবে।
গাজীপুরে আওয়ামীলীগ নেতা রেপ করলো মাত্র নতুন বিবাহ করা বৌ’কে। মুজিব তাকে ছেড়ে দিলেন। আবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অনেক’কে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল মেজর জিয়াউর রহমান (হুমায়ূন আহমেদের দেয়াল পড়েন বুঝতে পারবেন)
শহীদ জিয়া দাবী করে বসলেন স্বাধীনতার ঘোষক  কিংবা মুক্তিযুদ্ধে  মূল নায়ক বলে। তবে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধে  জিয়াউর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য।
তবে কি জানেন পৃথিবীর বেশিরভাগ বিপ্লবীরাই এমন হয়। মাও সে তুং বা ফিদেল ক্যাস্ত্রো এরাও কিন্তু এমনি ছিলেন।
চে গুয়েভারাকে আমরা এতো মহান বলি কারণ সে ক্ষমতা পায় নাই। পাইলে তখন চে গুয়েভারাও হয়তো স্বৈরাচার হয়ে উঠতেন।
কিন্তু ব্যক্তি মুজিবকে এক চোখে দেখার সুযোগ নাই।
মুজিব ছিলেন এমন এক নেতা।যিনি পুরো জাতিকে এক করেছিলেন।পুরো জাতির নেতৃত্ব দিয়েছেন।সারাজীবন রাজনীতি করে বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।কিন্তু তার মেয়ে তা ধ্বংস করে ছাড়লেন।
বিএনপির সামনে সুযোগ ছিলো ছাত্রদের সহযোগী হওয়া।শহীদ ছাত্রদের জন্য শোক সমাবেশ করা।
কিন্তু এই দুইদিনে তাদের নেতারা প্রমাণ করছে, তারা শিক্ষার্থীদের সহযোগী না, আওয়ামীলীগের মতো প্রতিশোধ নিতেই এসেছে।কিন্তু ১৭ বছরে তো দেখলাম না এমন ভাবে বুক চেতিয়ে দিতে।মেরুদণ্ডহীনের মত লেজ গুটিয়ে রেখেছেন।
দেশে একটা সফল বিপ্লব হয়েছে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আন্দোলনে। বিএনপির জন্য না। ২০০৫ এর শেষ দিকে সদ্য হাই স্কুলে যাই।আব্বা উনার স্কুল থেকে এসেই তখনকার সরকারের করা মানুষের ক্ষতির কথা বলতেন। আসলে বর্তমান আওয়ামী লীগ তখনকার বি এন পির মুদ্রার এপিট ও পিট।  যারা বিএনপির আমলে বয়সে আমার থেকে বড় তারা হয়তো বেশি জানে। তখন কি হতো। চুরি ডাকাতি জঙ্গিবাদ ধর্ষণ, অর্থ পাচার,  সীমাহীন দুর্নীতি  , সংখ্যালঘুরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো না কত কিছুই ছিল তখন। এই তথ্য গুলো জেন জিরা খুব বেশি একটা জানে না।
সারাদেশে টোকাই এর দল লুটপাত শুরু করেছে। দুই দলের পান্ডারা বাড়িতে বাড়িতে হামলা করতেছে। ওদিকে বাংলাদেশকে নিয়ে ক্রমাগত অপপ্রচার শুরু করে দিয়েছে ইন্ডিয়ার সকল মিডিয়া।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপির কী উচিত ছিলো?
বিএনপির উচিত ছিলো, এই লুটপাত বন্ধ করা। মন্দির পাহারা দেওয়া। ছাত্রদের দাবির প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে একটা ইনটেরিম গভর্নমেন্ট চাওয়া। আইনের শাসন চাওয়া।  কিন্তু ছাত্ররাই তা প্রতিরোধ করছে।দেশ পরিষ্কার থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে সকল জায়গায় তাদের অবস্থান দিয়ে যাচ্ছে।।
তবে বিএনপি কী করলো?
নিজেদের মধ্যে মারামারি লুট শুরু করছে। সিরাজগঞ্জে অলরেডি নিজেদের মধ্যে মারামারি করে দুইজন মরে গেছে। যত চান্দার জায়গা আছে দখল করতেছে।থ্রেট দিচ্ছে হিসাব বুঝে নিবে।
ক্ষমতায় আসার আগেই বিএনপির যদি এই ভয়ঙ্কর রূপ হয়, তাহলে ক্ষমতায় গেলে এরা কী করবে?
এরা এখন হল দখল করতে চাইতেসে। কেন? পোলাপাইন ছাত্রলীগের পান্ডা খেদাইসে ছাত্রদলের গুন্ডার হাতে মার খাওয়ার জন্য?
বিএনপি কি পারতো না এই সময়টা শহীদদের ক্ষতিপূরণ দিতে? বা দেশের এই পরিস্থিতিতে বিএনপির কি উচিত ছিলো না, দেশ সংস্কারের পরিকল্পনা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা?
তারা সেটা করে নাই। তারা ধানমন্ডির কোন বাজার কে দখল করবে কোন দোকান কে নিবে সে ভাগাভাগি তে ব্যস্ত। গত দুইদিনে বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীদের কাজকর্ম তাই বলতেসে। বিএনপি কোন বিকল্প ব্যবস্থা  চায় না। বরং বিএনপি আরো একটা আওয়ামী দানব হতে চায়।
আওয়ামীলীগ যেইটা করেছে শেখ মুজিবের নামে, বিএনপি সেটাই করতে চায় জিয়াউর রহমানের নামে। কানের কাছে শেখ মুজিবকে আর মুক্তিযুদ্ধ কে সারাদিন জোর করে শুনানো। ব্যবসা করা ঠিক একই কাজ করবে বিএনপি জিয়াউর রহমানকে কানের কাছে বাজাবে আর ব্যবসা করবে তাকে নিয়ে।
তারেক রহমান এতদিন দেশে আসার সাহস পায়নি।কাপুরুষের মত বিড়াল হয়ে ছিল। এখন বলে বীরের বেশে আসবেন। আরে বীর হলে তো আগেই আসতেন।
দেশে  আজকে ভাষণ দিলেন। নতুন কোন কথা নাই। সেই হাসিনার মতোই ষড়যন্ত্র বলে চলে গেলেন। এইসব বা*ছা*বলে আপনি রাজনীতি করবেন? এই হ্যা*র ভাষা দিয়ে আপনি এই প্রজন্মের সাথে কথা বলবেন?
খুনি হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসন ছাত্ররা ১৫ দিনে ধ্বংস করে দিয়েছি। আর এই আমাদের সাথে আপনি হাসিনার ভাষায় কথা বলে ১৫ দিন টিকতে পারবেন, এই দুঃসাহস কখনও করবেন না।
আমাদের বিপ্লবের স্লোগানগুলো তারেক রহমানের জানা দরকার। অনেক অনেক স্লোগানের মধ্যে আমাদের একটা স্লোগান ছিলো।
লাখো শহীদের রক্তে কেনা,
দেশটা কারো বাপের না।
হাসিনা ভেবেছিল দেশটা তার বাপের। তারেক জিয়াও ভাবতেছে তার বাপের। আর যারা আছে তারা বহিরাগত।
কার্যত নির্বাচন হলে বি এন পি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা  বেশি। এখন আপনিও যদি সেইম ভুলটা করতে যান, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ আরও একবার আপনাকেও “দেশটা কারো বাপের না”  বুঝিয়ে দিতে এক মুহূর্ত সময় নিবে না।
তবে আশা করি তারেক জিয়া অতীত বর্তমান ও অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এ ক্ষমতায় আসলে শুধরাবে। দেশকে এগিয়ে নিবে হয়তো!
এইসব ছাড়িয়ে আরেকদল আছে যারা বলতেছে। অমুক সূরাহ জাতীয় সংগীত হোক,পতকা পরিবর্তন হোক, তমুক প্রধানমন্ত্রী হোক। শাপলা চত্ত্বর শহীদ চত্বর  হোক,রবীন্দ্রনাথের  ভাস্কর মিনার হোক,বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যেখানে স্বাধীনতার কতশত স্মৃতি ভেঙ্গে,পুড়িয়ে দিল।   বীরশ্রেষ্ট, আর চার নেতার ভাস্কর ভেঙ্গে সেখানে ধর্মীয় চত্তর ঘোষনা করতে হবে। কি ভাই এটা বাজার পাইছেন নাকি।   শহীদ মিনার স্মৃতিসৌধ ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় তারা যারা তারা মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস মুছে দিতে চায়। লেগে গেছে আরবি বাংলা ক্যালিগ্রাফি নিয়ে আরে ভাই যাক না কিছুদিন।
আরেকদল আছে যারা বলবে মেয়েরা থাকবে চার দেয়ালের ভিতরে সব ধরনের চাকরি বাদ।ঘরে বাচ্চা উৎপাদন করবে আর স্বামীর সেবা করবে। এটা বলার কারন দেখলাম বেগম রোকেয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ছবি ভেঙগে মা*গী লিখে রাখছে। তাহলে বুঝেন তারা আসলে কি হবে। পরিচিত এক ভাইয়ের রগ কেটে ফেলে রেখছিল একদল। বহু চরাই উৎরাই  করে সুস্থ হয়েছেন এখন চোখের সামনে উনি এখনো মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেন। সেই অধিকার যারা রগ কেটেছিল তাদেরও অধিকার।
দেশে ভাস্কর্য থাকবে, গান থাকবে, বোরকা থাকবে, সিঁদুর থাকবে, মসজিদ, মন্দির,প্যাগোডা,চার্চ সব থাকবে। থাকবেনা শুধু স্বৈরাচার আর ব্যক্তি পূজা। যদি ইসলামিক দলগুলো এসব মানতে না পারে তাহলে তারা  ভুল করবে।  অধিকাংশ ধর্মীয় দল ধর্ম কে ব্যবহার করে আশা রাখি যেন এবার সেটা পরিবর্তন হয়। ভাষা আন্দোলন  আর মুক্তিযুদ্ধকে যারা মানতে নারাজ তাদের আমি ঘেন্না করি। যদি এইসব চলে দেখবেন আবার শেখ হাসিনার মত কেউ ফিরে আসবে তখন ধর্মীয় নেতাদের আবার ডিভি অফিসে রাত কাটাতে হবে।
প্রথম থেকে বলে আসতেছি পুলিশ সেনাবাহিনী যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে তাদের খুব বেশি দোষ আমি দেখি না।  চেইন অব কমান্ড নামে যে জিনিস টা আছে তা অবশ্যই সমস্যা।  ঘুটি কয়েকজনের সরকারি লোক তাদের  ইচ্ছে মতন বাহিনিকে ব্যববহার করছে। মাঠের সদস্যরা অপারগ কারন তাদের পরিবার আছে তারা না আবার আয়না ঘর কিংবা হাওয়া ভবনে চলে যেতে হয়। কিংবা চাকরি হারিয়ে পথে নামতে হয়। এখন সময় এই চেইন অব কমান্ড ঠিক করা।
 আশা করি এইবার আর এমন হবে না। এইবার শুরুটাই দারুন হয়েছে। যে ১৭ জনের মধ্যে ২০২৪ এর ছাত্র-শিক্ষক জনতার আন্দলোনের  মাধ্যমে যারা নতুন স্বপ্ন অর্জন করেছে তা সুন্দর হবে, তবে বাঙালী মন কাউকে বিশ্বাস করতেও মন চায়  এই ১৭ জন মানুষ ভুল করতেই পারে লোভ জাগতেই পারে।  ক্ষমতা আর টাকা বহুত বেজুইতের জিনিস।  ১৭ জনের অনেকের অনেক ভালো খারাপ দিক ফেইসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে   সত্য মিথ্যা কি না জানি না তবু আশা রাখি ভালো কিছু হবে। “আমেরিকা কিংবা পশ্চিমারা যাদের বন্ধু তাদের শত্রুর  প্রয়োজন হয় না” কথাটা বহু মানুষ মানে তবু আশা রাখি এসব ছাপিয়ে যাবে এই সরকার।
 ছাত্র সমাজের দুইজন প্রতিনিধি আছে যেটা আগে কখনো হয়নি। আমি আশা করব এরা নিজেদের কেবল দুজন  ভাববে না। এরা অসংখ্য শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি। আশা করি শত শত শিক্ষার্থীর ত্যাগের কথা ভুলবে না। তারা কোন না কোন একটা পথ বের করবে যার মাধ্যমে গোটা ছাত্র সমাজের আকাঙ্খার কথা জানতে পারে।
দুজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টার কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ তারা যেন সর্বদা গার্ড দেয়। শিক্ষায় যেন বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে জোরালো ভূমিকা রাখে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন শিক্ষার্থীরা পড়ার পরিবেশ পায়। শিক্ষা বিভাগ নতুন করে সাজুক, গবেষণায় বাজেট বাড়ুক শিক্ষার্থীদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা এই দুইজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদের চেয়ে বেশি আর কেউ জানে না। নতুন সকাল, নতুন সরকার তাই নতুন আশায় বুক বাঁধলাম। এই সরকার সফল মানে বাংলাদেশ সফল।
তবে ড. ইউনূস একজন জ্ঞানী মানুষ। উনার বিকল্প ছিলনা কেউ এই মুহূর্তে। আশা রাখছি ভাল কিছুই হবে।
আমি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি
যে বাংলায় বৈষম্য থাকবে না থাকবে শুধু ভালোবাসা। মানুষকে বাঁচতে দিবে। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু,জিয়াউর রহমান, ২৪ এর ছাত্র জনতা সবাই সম্মান পাবে। কেউ মুদ্রার এপিট ওপিট হবে না।  পাহাড় সমতল সব বৈষম্য সমান থাকবে, পাহাড়ে শান্তি ফিরবে।  দেশটা হিন্দুর, দেশটা মুসলমানের, দেশটা বৌদ্ধদের, দেশটা ক্রিস্টানের, দেশটা সবার।
জয় বাঙলা।
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।
রাফা নোমান
৮ আগস্ট ২০২৪
{{ reviewsTotal }}{{ options.labels.singularReviewCountLabel }}
{{ reviewsTotal }}{{ options.labels.pluralReviewCountLabel }}
{{ options.labels.newReviewButton }}
{{ userData.canReview.message }}

Hi, I'm Rafa

Welcome to my world of exploration! I’m a passionate travel blogger from Bangladesh, dedicated to showcasing the incredible beauty and rich culture of my homeland.

Find us on Facebook